প্লাম্বিং পাইপের রকমফের

প্রাচীনকালে, যখন মানুষ সবে প্লাম্বিং করতে শিখলো, ক্লে আর লেড (সীসা) পাইপই ছিল প্লাম্বিংয়ের জন্য একমাত্র বিকল্প। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে, বাসাবাড়ি নির্মাণশিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া আসবার পর প্লাম্বিংয়ের পরিধি বেড়েছে। পানি সরবরাহ আর পয়োঃনিষ্কাশন ছাড়াও বাসাবাড়ির ফিটিং কিংবা উষ্ণ পানি পরিবহনের জন্য ভিন্ন পাইপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে লাগলো। তাছাড়া সীসার পাইপের দীর্ঘকাল ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট বিষাক্ততার ব্যাপারও মানুষকে ভাবিয়ে তোলে।

ফলে প্লাম্বিংয়ের জন্য এক-দুটি পাইপের ব্যবহার ছেড়ে নানারকম পাইপের ব্যবহার শুরু হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক সর্বাধিক প্রচলিত প্লাম্বিং পাইপগুলো সম্পর্কে।

কপার (Copper) বা তামার পাইপ

প্লাম্বিংয়ের জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত পাইপগুলোর একটি হলো কপার পাইপ। সাধারণত দুই ধরনের কপার পাইপ প্লাম্বিংয়ে ব্যবহৃত হয়– কঠিন ও নমনীয়। পানি সরবরাহের জন্য কঠিন কপার পাইপের ব্যবহার আর সংযুক্তিতে নমনীয় কপারের রিভেট বা সংযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তবে পানির কল তৈরিতেই নমনীয় কপারের ব্যবহার সর্বাধিক। উভয় প্রকার পাইপ ১৫, ১৮ আর ২২ মিলিমিটার ব্যাসে পাওয়া যায়। তবে বৃহৎ পরিসরে কাজের জন্য ১০৮ মিলিমিটার ব্যাসের কপার পাইপও হয়।

কপার পাইপের সবচেয়ে বড় সুবিধা এর দীর্ঘস্থায়িত্ব। ৫০ বছর পর্যন্ত টেকসই হতে পারে ক্ষয়নিরোধক এই পাইপগুলো। এদের ভেতর কোনোপ্রকার শেওলা বা ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে না, তাই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। পাশাপাশি এই পাইপ অত্যধিক তাপ সহনশীল।

অসুবিধা বলতে কপারের পাইপ তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। এছাড়াও পরিবেশবিদরা অতিরিক্ত পরিমাণে ভূগর্ভস্থ কপার উত্তোলনের বিরোধিতা করেন, কেননা এটি পরিবেশের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।

গ্যালভানাইজড (Galvanised) লোহার পাইপ

বাসাবাড়িতে ফিটিং, পয়োঃনিষ্কাশন কিংবা পানি সরবরাহের জন্য পেটা লোহার পাইপের তুলনায় গ্যালভানাইজড লোহার পাইপ অধিক জনপ্রিয় ছিল একসময়। এই পাইপে জিংকের আস্তরণ থাকায় এতে মরিচা ধরে না সহজে, সময়ের সাথে উজ্জ্বলতাও কমে যায় না।

তবে এই পাইপের সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই যেন বেশি। প্রথমত, এর স্থায়িত্ব কম, ২০-২৫ বছর সাধারণত। সীসার গ্যালভানাইজেশন হলে সেই পাইপের পানিতে সীসার বিষাক্ততা ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। কোনো কারণে জিংকের আস্তরণ চলে গেলে সহজেই মরিচা পড়ে। ভীষণ ভারি হওয়ায় নির্মাণকাজে এর ব্যবহারও কষ্টসাধ্য। আবার জিংকের সাথে পানিতে উপস্থিত খনিজ পদার্থের বিক্রিয়ায় ক্রমে গাদ জমা হয় পাইপের ভেতর, এবং একসময় তা সম্পূর্ণ পাইপও বন্ধ করে দিতে পারে।

পিভিসি (Polyvinyle Chloride) পাইপ

পিভিসি পাইপ এখনকার সময়ে প্লাম্বিংয়ের জন্য সর্বাধিক জনপ্রিয় নামগুলোর একটি। বাসাবাড়ির পানি সরবরাহ কিংবা ফিটিংয়ে সমানভাবে ব্যবহৃত হয় এই পাইপ। তুলনামূলক স্বল্পমূল্যের পিভিসি পাইপ চাপ সহনশীল, মরচে পড়ে না, তাই ক্ষয়ে যায় না। ওজনে কম এবং সহজে কাটা যায় বলে ব্যবহারও সহজ।

পিভিসির বড় শত্রু হলো তাপ। অধিক তাপে পিভিসি পাইপের আকার বিকৃতি ঘটতে পারে, এমনকি ফেটেও যায়। আবার আকারে বৈচিত্র্য না থাকায় জটিল নির্মাণকাজে এই পাইপ ব্যবহার করলে বারবার কাটা এবং জোড়া দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।

সিপিভিসি (Chlorinated PVC) পাইপ

পিভিসি পাইপের সাথে পার্থক্য এর নাম থেকে অনুমান করা যায়। পিভিসি পাইপের সাথেই ক্লোরিন মিশ্রিত করে তৈরি করা হয় সিপিভিসি। কারণটাও অনুমেয়। অতিরিক্তি এই ক্লোরিন সিপিভিসি পাইপকে তাপ সহনশীল করে তোলে।

সিপিভিসি পাইপ প্রায় ২০০º সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ সহনশীল, দামে কম, ক্ষয়কারী পদার্থ পরিবহনে সক্ষম, দীর্ঘস্থায়ী এবং চাপ সহনশীল। ঝামেলা বলতে ভঙ্গুরতা। ক্লোরাইড থাকায় এই পাইপ দীর্ঘক্ষণ সূর্যালোকে থাকলে ফেটে যেতে পারে। তাই এই পাইপ সাধারণত গৃহাভ্যন্তরে ব্যবহারের জন্য কাজে লাগান হয়।

ক্রস লিংক পলিইথিলিন (Cross Linked Polyethelyne) বা পেক্স পাইপ

পেক্স পাইপের বিশেষত্ব হলো এটি নমনীয় এবং বাঁকানো যায়। পিভিসির মতো এটিও একটি প্লাস্টিক পাইপ। তাছাড়া এই পাইপ কাটা এবং জোড়া লাগানো অত্যন্ত সহজ। রাবারের বার্ব ব্যবহার করে কিংবা অল্প আঁচে এক মুখ প্রসারিত করে দুটি পাইপকে সংযুক্ত করা যায়। নমনীয়তার পাশাপাশি তাপ সহনশীলতা এবং টেকসই হওয়াও পেক্স পাইপের গুণ। তবে ঝামেলা হলো এতে পানি দূষণের সম্ভাবনা থাকে। কিছু পেক্স পাইপে পানি সরবরাহ করলে তাতে গন্ধ হয়ে যায়।

সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পাইপগুলো ছাড়াও আরো অনেক প্রকার প্লাম্বিং পাইপ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কেও সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক।

স্টেইনলেস স্টিল পাইপ

এগুলো দামে অধিক, মানেও উন্নত। অত্যধিক চাপ ও তাপ সহনশীল, ক্ষয়রোধী। তবে ক্ষয়কারক তরল পরিবহনযোগ্য নয়। দীর্ঘস্থায়ী এসব পাইপ কঠিন ও নমনীয় উভয় প্রকারের পাওয়া যায়।

পলিবিউটিলিন (Polybutylyne) পাইপ

এ পাইপগুলোকে একসময় পেটা লোহার পাইপের বিকল্প ভাবা হতো। পিভিসির মতো একপ্রকার প্লাস্টিকের পাইপ। পলিবিউটিলিন পাইপের বাজারে নতুন দিনের সূচনা করেছিল গত শতকের ‘৮০র দশকে। তবে ধীরে ধীরে এর ব্যবহার কমে আসে সংযুক্তির সমস্যার কারণে। দামে কম এই পাইপের সমস্যা একটাই, সংযোজন স্থানে সহজে লিক হয়, ফেটে যায়।

এবিএস পাইপ

অল্প দামে অধিক কর্মসম্পাদনের জন্য এবিএস পাইপ উপযোগী। এ পাইপ ক্ষয়কারী রাসায়নিক সহনশীল এবং মোটামুটি মাত্রায় তাপ সহনীয়। এবিএস পাইপ সাধারণ ড্রেনেজ ব্যবস্থায়, ছোট খাল বা নালায় ব্যবহার করা হয়।

ব্রাস (Brass) বা পিতলের পাইপ

পিতলের পাইপ যেকোনো দিক বিবেচনায় অন্য অনেক পাইপের তুলনায় অত্যন্ত কর্ম-উপযোগী। কারণ এ পাইপের চাপ ও তাপ সহনক্ষমতা বেশি, ক্ষয়রোধী, মরচে ধরে না, এবং দীর্ঘদিন টেকে। কিন্তু বড় পরিসরের কাজে এই পাইপ সাধারণত ব্যবহার হয় না বললেই চলে। কারণ এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিচেন সিংকে, পানির কলে বা বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধক অভ্যন্তরীণ কাজে পিতলের পাইপ ব্যবহার করা হয়।

হাই ডেনসিটি পলিইথিলিন (High-Density Polyethylene) বা এইচডিপিই পাইপ

এইচডিপিই পাইপগুলো বাজারে পিভিসি শ্রেণীর পাইপের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের। এ পাইপগুলো অনেক বেশি চাপ সহনশীল। যেকোনো ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী এগুলো ৯০° কোণ পর্যন্ত বাঁকানো যায়। ৫০ বছর অনায়াসেই টিকে যেতে পারে এগুলো, যদি না চরম পরিস্থিতির শিকার হয়। দাম সহনশীল হওয়ায় এ পাইপের ব্যবহারও জনপ্রিয়, বিশেষ করে শিল্প-কারখানার পানি সরবরাহে।

ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেমে ব্যবহৃত পাইপের রকমফের: কোনটি কেন ব্যবহৃত হয়, সুবিধা-অসুবিধা

ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম বা পানি সরবরাহ ব্যবস্থা যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। পানি সরবরাহের পাইপ যদি টেকসই ও চাপ সহনক্ষম না হয়, তাহলে পুরো নির্মাণকাজই নস্যাৎ হতে পারে। পাইপ ফেটে চুইয়ে পানি পড়া ঘরের দেয়ালের রঙ নষ্ট করা থেকে শুরু করে পলেস্তারা খসানো, শেওলা জমানো, এমনকি দেয়াল-ছাদের গাঁথুনি পর্যন্ত দুর্বল করে দিতে পারে। তাই বাসাবাড়ি, অফিস ও শিল্পকারখানা- যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণে পাইপ নিয়ে যথেষ্ট মাথা ঘামাতে হবে।

অবকাঠামো নির্মাণে পানি সরবরাহের পাইপের রয়েছে রকমফের। সবকাজে সবরকম পাইপ মানানসই না। পানি সরবরাহের জন্য সবচেয়ে মানানসই পাইপগুলো কোনটি কী কাজে ব্যবহৃত হয় সেই ব্যাপারে জানা যাক চলুন।

কাস্ট আয়রন (Cast Iron) বা ঢালাই লোহার পাইপ

পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সর্বাধিক ব্যবহৃত পাইপের নাম কাস্ট আয়রন পাইপ বা ঢালাই লোহার পাইপ। এই পাইপ এর ক্ষয়রোধী ক্ষমতা, দীর্ঘস্থায়িত্ব আর অন্যান্য পাইপের তুলনায় সাশ্রয়ী হবার জন্য এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয়।

ঢালাই লোহার পাইপ ৫ সেন্টিমিটার থেকে শুরু করে ১২০ সেন্টিমিটার বা তারও বেশি ব্যাসের হতে পারে, লম্বায় ১২ ফুট থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত। বিশেষ কোনো দুর্যোগের সম্মুখীন না হলে ঢালাই লোহার পাইপ ১০০ বছর বা তারও বেশি টিকে থাকতে পারে। ব্যবহারবিধি অনুযায়ী এই পাইপের ঘনত্বও ভিন্ন হয়।

ঢালাই লোহার পাইপের আরেকটি বড় সুবিধা হলো সহজ সংযুক্তি। এই পাইপ একটির সাথে আরেকটি সহজে সংযুক্ত করে বা প্রয়োজন অনুযায়ী আকৃতিতে কেটে নেয়া যায়।

এটি ব্যবহারের প্রধান অসুবিধা হলো মরিচা পড়া। স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে এই পাইপের উপর সহজেই মরিচা ধরে, শৈবাল জমে এবং পাইপ ক্ষয় হতে শুরু করে।

গ্যালভানাইজড আয়রন পাইপ (Galvanised Iron Pipe)

গ্যালভানাইজড আয়রন পাইপকে সংক্ষেপে জিআই পাইপ বলা হয়। এটি সাধারণ স্টিল বা ইস্পাতের পাতের উপর গ্যালভানাইজ করে তৈরি করা হয়। সহজ ভাষায় বললে, ইস্পাতের পাইপ তৈরি করে তা জিংকের মিশ্রণে ডোবানো হয় নতুন আস্তরণের জন্য। এ প্রক্রিয়াকে গ্যালভানাইজিং বলে। জিআই পাইপ বৃহৎ পরিসরের কোনো কাজে ব্যবহৃত হয় না। সাধারণত ১২ মিলিমিটারের সরু পাইপ থেকে শুরু করে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ব্যাসের জিআই পাইপ তৈরি করা হয়। লম্বায় এসব পাইপ ২০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

জিআই পাইপও তুলনামূলকভাবে স্বল্পমূল্যের। বাসা-বাড়িতে পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের লাইনের জন্য এই পাইপ ব্যবহার করা হয়। ব্যাস কম হওয়ায় এটি সহজেই দেয়ালের ভেতর দিয়ে স্থাপন করা যায়। এছাড়াও এটি পাতলা এবং সহজে কাটা ও জোড়া দেয়া যায়।

জিআই পাইপ ব্যবহারের অসুবিধা হলো এর স্থায়িত্ব। এটি ১০ বছরের বেশি স্থায়ী হয় না। আবার পানি কিছুটা অম্লীয় বা ক্ষারীয় হলে এই পাইপ ক্ষয় হতে শুরু করে।

রট আয়রন (Wrought Iron) বা পেটা লোহার পাইপ

জিআই পাইপের সাথে রট আয়রন বা পেটা লোহার পাইপের একমাত্র পার্থক্য হলো এতে গ্যালভানাইজিং করা হয় না, পেটা লোহার পাত ওয়েল্ডিং (ঝালাই) করে এই পাইপ তৈরি করা হয়।

পেটা লোহার ব্যবহারবিধিও অনেকটা জিআই পাইপের মতো- পানি, গ্যাস, ইত্যাদি পরিবহনে ব্যবহার করা হয় এটি। তবে পার্থক্য এর প্রয়োজনীয়তায় এবং ব্যবহারবিধির বৈচিত্র্যে।

পেটা লোহার পাইপ জিআই পাইপের তুলনায় হালকা, সহজে কাটা যায়, জোড়া লাগানো যায় এবং যেকোনো আকৃতিতে বাঁকিয়ে ব্যবহার করা যায়। ১২ মিলিমিটার থেকে ১৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের পেটা লোহার পাইপ মূলত যেসব কাজে পাইপ অধিক পরিমাণ কাটা বা জোড়া লাগানোর প্রয়োজন হয়, সেসব কাজে ব্যবহার করা হয়। এই পাইপ জোড়া লাগানোর তিনটি উপায় আছে- সকেট সংযোজন (Socket joint), ফ্ল্যাংড সংযোজন (Flanged joint) এবং ওয়েল্ডেড সংযোজন (Welded joint)।

স্টিল (Steel) বা ইস্পাতের পাইপ

জিআই পাইপ আর পেটা লোহার পাইপের সাথে স্টিলের পাইপের পার্থক্য হলো ব্যবহারবিধিতে। এই পাইপ সাধারণত অ

ধিক চাপে পানি, গ্যাস বা যেকোনো তরল সরবরাহের জন্য সংক্ষিপ্ত পরিসরের লাইনে ব্যবহার করা হয়। স্টিলের শিট ব্যবহার করে তৈরি করা এ পাইপেও জিআই পাইপের মতো জিংক সল্যুশন ব্যবহার করে অতিরিক্ত একটি আবরণ বা গ্যালভানাইজিং ব্যবহার করা হয়। স্টিলের পাইপ আকারে ছোট, পাতলা এবং অত্যন্ত মসৃণ। এসিড বা ক্ষারের সংস্পর্শে না এলে এ পাইপ সহজেই ২০-২৫ বছর টিকে যায়, মরিচাও পড়ে না।

কপারের পাইপ (Copper)

লোহা ও ইস্পাতের তুলনায় কপার বা তামা বেশ দামী। তাই কপারের পাইপ সাধারণত সীমিত পরিসরে বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে যখন পানি সরবরাহের অংশের সাথে শ্রী-বৃদ্ধির ব্যাপার যুক্ত থাকে, তখন এই পাইপ ব্যবহার করা হয়।

কপারে মরিচা ধরে না, তাই এর পাইপ দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়। গরম পানি পরিবহনে এই পাইপ সবচেয়ে বেশি উপযোগী। অত্যধিক তাপেও কপারের পাইপের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে অসুবিধা ঘটে চাপে। নরম ধাতু হওয়ায় অধিক চাপে এই পাইপ ক্ষয় হয়ে যেতে পারে বা ভেঙে যেতে পারে।

প্লাস্টিকের পাইপ (Plastic pipe)

প্লাস্টিকের পাইপ সাধারণ রাবার বা পিভিসি (পলিভিনাইল ক্লোরাইড) দিয়ে তৈরি। পিভিসি পাইপ আজকাল বাসা-বাড়িতে পানি সরবরাহের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়। কেননা, এই পাইপ চাপ সহনীয়, ক্ষয়রোধী, মরিচা ধরার কোনো সম্ভাবনাই নেই, সহজে শেওলাও জমে না। এতে পানি, গ্যাস ছাড়াও অম্ল বা ক্ষার পরিবহন করলেও ক্ষয় হয় না।

প্লাস্টিকের পাইপও সহজেই কাটা যায়, আর যেকোনো মাপ অনুযায়ী জোড়া লাগানো যায়। ইউনিয়ন বা রিভেট ব্যবহার করে এই পাইপ জোড়া দেয়া হয়। প্লাস্টিকের পাইপের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো তাপ অসহনশীলতা। অধিক তাপে এই পাইপ অকার্যকর হয়ে পড়ে, ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

এসব পাইপ ছাড়াও অধিক পরিমাণ পানি সরবরাহের জন্য, বিশেষ করে শিল্প কারখানায় অ্যাসবেস্টসের পাইপ (Asbestos Pipe), কংক্রিট পাইপ (Concrete Pipe) ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। অবশ্য পয়ঃনিষ্কাশনেই এ পাইপগুলো অধিক ব্যবহারোপযোগী।

বাড়ি নির্মাণে প্রয়োজনীয় স্যানিটারী আইটেমগুলো কি কি ?

নিম্নোক্ত বাড়ি নির্মাণে প্রয়োজনীয় স্যানিটারী আইটেমগুলো দেওয়া হলো-
  • বিপ কর্ক
  • পিলার কর্ক
  • টুইন বিপ কর্ক
  • হ্যান্ড সাউয়ার
  • বেসিন
  • বাথটাব
  • স্টপ কর্ক
  • এ্যাঙ্গেল স্টপ কর্ক
  • ফ্লাসিং চিস্টার্ন
  • ইউরিনাল
  • ওয়াটার ক্লোজেট
  • সিংক

এছাড়াও অনেক স্যানিটারী সামগ্রী আছে ।

ভাল স্যানিটারী আইটেম কীভাবে চিনতে হয়?

মিরপুরের কালশী এরিয়া অথবা হাতিরপুল এলাকায় বেশ কিছু ভালোমানের স্যানিটারী আইটেম এর ডিলার শপ রয়েছে। এখান থেকে কিনতে পারেন। আসলে চোখে দেখে ভালো স্যানিটারী আইটেম চেনার উপায় নেই, ব্যবহারে বোঝা যায়। তাই খুব ভালো হয় যদি ইতোমধ্যে বাড়ি বানিয়েছেন এমন কোন ব্যক্তির পরামর্শ নিতে পারেন।

শক্ত, মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী পাইপ এর বৈশিষ্ট্য কি ?

শক্ত, মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী পাইপ এর বৈশিষ্ট্য-
  • দীর্ঘস্থায়ী
  • GI (Galvanized Iron) ও MS (Mild Steel) পাইপ যা সহজে ঝালাই করা যাবে
  • এন্টি জং আবরণ এবং চমৎকার ফিনিসিং হতে হবে
  • ক্ষয়রোধে উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন
  • থ্রেডিং সহজ এবং বাঁকানোর চমৎকার ক্ষমতাসম্পন্ন
  • কাটা সহজ হবে
  • কার্বনের পরিমাণ কম থাকবে
  • পর্যাপ্ত টান শক্তি নিতে সক্ষম
  • আন্তর্জাতিক মানদণ্ড এবং ASTM স্পেসিফিকেশন মেনে তৈরি
  • পাইপে লিকেজ থাকবে না।
বাজারে সেরা পাইপ ফিটিংস কোন গুলো ?

বাজারে বিভিন্ন ধরনের পাইপ ও ফিটিংস সামগ্রী আছে যার নাম সংযোজন করা হল না। বাড়ি নির্মাণে বর্তমানে সাধারণতঃ PVC পাইপ এবং ফিটিংস ব্যবহৃত হয়। PVC এবং GI পাইপ রানিং ফিট এবং ফিটিংসগুলি পিচ হিসাবে বাজারে বিক্রি হয়।