কীভাবে মার্বেলের দাগ দূর করবেন?

আদিকাল থেকেই গৃহনির্মাণে মার্বেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গৃহসজ্জায় চাকচিক্য, নান্দনিকতা, সর্বোপরি মসৃণ এক অনুভূতি দেয় মার্বেলের মেঝে, দেয়াল কিংবা অন্যান্য ব্যবহার। অবশ্য সৌন্দর্যের সাথে মার্বেল নিয়ে আসে বাড়তি দায়িত্বও। নিয়মিত যত্ন না নিলে মার্বেলের গায়ে তৈরি হয় অনেকরকম দাগ, যেগুলো মার্বেলের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে।

কিন্তু নিয়ম করে পরিচর্যার পরও যদি দাগ পড়েই যায়, তাহলে কী করা যায়? ভাবনার কারণ নেই। কীরকম দাগ তার ওপর নির্ভর করে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মার্বেলের দাগও দূর করা যায়। কীভাবে দাগ দূর করবেন, সেটি জানবার আগে চলুন দেখে আসি মার্বেলে কত রকমের দাগ হতে পারে।

মার্বেলে যত দাগ

তেলের দাগ – রান্নার তেল থেকে শুরু করে লোশন, দুধ, মাখন, প্রসাধনী তেল, গ্রিজ ইত্যাদি থেকে মার্বেলে তেল চিটচিটে ধূসর হলুদাভ দাগ হতে পারে।

জৈবিক কারণ – কফির কাপ, কাচের বাসনকোসন, বালতি, মগ ইত্যাদির কারণে এই দাগ হতে পারে যা ধূসর বা কালচে হয়।

পানির দাগ – নিয়মিত পানি পড়লে বা পানি জমে থাকলে, দ্রুত না মুছে ফেললে এই দাগ ধীরে ধীরে তৈরি হয়।

চিটি পড়া – এ ধরনের দাগ সবচেয়ে বেশি হয় গোসলখানায়, বিশেষ করে যে অংশে মার্বেল পুরো ভিজে না গেলেও পানির ফোঁটা পড়ে তার উপর।

মরচে পড়া দাগ – লোহা ও ইস্পাতের সামগ্রী থেকে মার্বেলে এই দাগ পড়ে।

এগুলো সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা। তবে এগুলো ছাড়াও ঘর্ষণের দাগ, কালির দাগ, চা-কফির দাগ, রঙের দাগ ইত্যাদি উপায়ে মার্বেলে দাগ পড়তে পারে।

দাগ ওঠানোর উপায়

মার্বেল থেকে কঠিন কঠিন দাগ ওঠানোর জন্য পোল্টিস (Poultice) নামক একপ্রকার রাসায়নিক ব্যবহার করা সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি। পোল্টিস বাজারেই কিনতে পাওয়া যায়। এটি নানা প্রকার রাসায়নিক ও পরিষ্কারক দ্রব্যের সংমিশ্রণে তৈরি। কেওলিন ক্লে (Kaolin Clay- একপ্রকার কাদামাটি), ফুলার্স আর্থ (Fuller’s Earth – অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট সমৃদ্ধ একপ্রকার কাদামাটি), ট্যাল্ক, বেকিং সোডা, চকের গুঁড়া ইত্যাদি মিশ্রিত করে চাইলে বাসাতেই প্রস্তুত করা যাবে এই ক্লিনার।

তেল চিটচিটে দাগ

তেলজাতীয় দ্রব্য সাধারণত মার্বেলের ক্ষুদ্র ছিদ্রগুলোতে প্রবেশ করে স্থায়ী কালচে দাগ তৈরি করে। এ দাগ দূর করার একটাই উপায়- ছিদ্রগুলোতে অবস্থান নেয়া এই তেল অপসারণ, যা সাধারণ ধোয়া-মোছায় সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রথম পদ্ধতি হলো অ্যামোনিয়া বা অ্যাসিটোন মিশ্রিত তরল ক্লিনার দিয়ে দাগ ওঠানোর চেষ্টা করা। এ পদ্ধতি কাজ না করলে পোল্টিস দিয়ে ভালো করে ঘসে ২৪ ঘণ্টা পর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে দ্বিতীয় দিনের মতো পোল্টিস দিয়ে ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত করতে হবে।

জৈবিক দাগ

চা, কফি, লেবুর রস ইত্যাদির জৈবিক দাগ তোলা বেশ সহজ। ১২% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের সাথে কয়েক ফোঁটা অ্যামোনিয়ার মিশ্রণে তৈরি লিকুইড ক্লিনার দিয়ে এ দাগ সহজেই তোলা যাবে। তবে কালো রঙের মার্বেল পাথরের ক্ষেত্রে এই মিশ্রণ ব্যবহারে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা অধিক সময় এর ব্যবহারে কালো রঙের মার্বেলের রঙ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে।

গোসলখানায় পানির দাগ

গোসলখানার দেয়ালে প্রতিনিয়ত পানির ছিটা কিংবা সাবান/ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানির ছিটা পড়ে, তাতে দীর্ঘস্থায়ী দাগ তৈরি হয়। তবে এই দাগ দূর করাও বেশ সহজ। একটি মাঝারি আকারের বালতিতে (৬-৮ লিটার পানি) আধা কাপ অ্যামোনিয়া মিশিয়ে দেয়ালে ভালোভাবে ঘষলেই এ দাগ উঠে যাবে। একদিনে না উঠলে ২/৩ দিন পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যহত রাখতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, অধিক অ্যামোনিয়া মানেই অধিক পরিষ্কার নয়। বরং অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া ব্যবহার করলে দেয়ালের মার্বেলের রঙ ঝলসে যেতে পারে।

মরচে পড়ার দাগ

ধাতব বস্তু থেকে মরচে পড়ার যে দাগ তৈরি হয় মার্বেলে, তা তুলতে গিয়ে অনেকে মার্বেলের বিস্তর ক্ষতিসাধন করে থাকেন তীক্ষ্ম বা ধারালো কোনো ধাতব বস্তু দিয়ে ঘষে। যদিও মরচে পড়া দাগ দূর করা দুরূহ ব্যাপার, তবে ধাতব বস্তুর ঘর্ষণ একেবারেই করা যাবে না।

প্রথমত, মোলায়েম ব্রাশ দিয়ে ভালো করে দাগ পড়া অংশগুলো ঘষতে হবে যেন মরচের অতিরিক্ত আবরণই কেবল উঠে যায়, নতুন কোনো দাগ সৃষ্টি না হয়। এরপর পোল্টিস প্রয়োগ করে ঘষতে হবে। টানা কয়েকদিন পোল্টিস প্রয়োগ করলেই কেবল মার্বেলের সূক্ষ্ম ছিদ্রের ভেতর প্রবেশ করা মরচে বের করে আনা সম্ভব হবে। এতেও না হলে জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রয়োজন হতে পারে, যা পেশাদার কাউকে দিয়ে করানো উত্তম।

কালির দাগ

যেসব কালির দাগ পানিতে ধুয়ে দিলে যায় না, সেগুলোর জন্য পোল্টিসই যথেষ্ট। তবে অত্যধিক পরিমাণে কালি পড়লে কিংবা আঠালো এবং স্থায়ী কোনো কালচে দাগ তুলবার জন্য বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত অধিক শক্তিশালী লিকুইড ক্লিনার প্রয়োজন। তবে এই লিকুইড ক্লিনার নিজে ব্যবহার না করে পেশাদার কাউকে দিয়ে করানোই যুক্তিযুক্ত। কারণ সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে না পারলে এতে দু’রকম ঝামেলা হতে পারে– মার্বেলের চাকচিক্য নষ্ট হয়ে যাওয়া, এবং হাতে চুলকানির সৃষ্টি হওয়া।

ধোঁয়া কিংবা আগুনে পোড়া দাগ

দীর্ঘক্ষণ ধোঁয়ায় থাকলে কিংবা আগুনের সংস্পর্শে মার্বেলে গভীর কালো দাগ হতে পারে যা ওঠানোর জন্য বেশ কসরত করতে হবে। পোল্টিসের প্রলেপ দিয়ে ২৪ ঘণ্টা পর ভালো করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং সেটি শুকিয়ে এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। এভাবে কয়েকবার করার পর মার্বেল প্রাথমিক রূপে ফিরে আসতে পারে।

মেঝের একাল সেকাল

ঘরের মাঝে আমাদের সবচেয়ে কাছাকাছি সংস্পর্শে থাকে মেঝে, সারাক্ষণ মেঝের ওপর দিয়েই চলাচল হয় সবার। তাই ফ্লোর ফিনিশিংয়ের বিষয়টি বাড়ি নির্মাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

Continue reading

টাইলস করার নিয়ম কানুন ও যত কথা

আধুনিক শহরের বাসা বাড়িগুলো এখন টাইলস ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। যে পোড়ামাটির টাইলসের ব্যবহার শুরু হয়েছিল প্রায় সাত হাজার বছর আগে মিসরীয় সভ্যতায়, তা এখনকার সময়ে মেঝে ও দেয়ালের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নির্মাণ সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে। ‘টাইলে- tuile’ ফ্রেঞ্চ শব্দ থেকে টাইলস শব্দটা এসেছে, তবে এরও অনেক আগে ল্যাটিন ভাষায় ‘টেগুলা-Tegula’ শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। টাইলসের বিকল্প হিসেবে ফ্লোর বা দেয়ালে আরো বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একসময় শুধু সিমেন্ট নেট ফিনিশিং দিয়ে ফ্লোর ফিনিশিং করা হত এবং পরে মোজাইকের কাজ খুব জনপ্রিয় ছিল। অনেক ফ্লোরে আবার মার্বেল বা গ্রানাইট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে টাইলসের ব্যবহারই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। কারণ হিসেবে রয়েছে স্থাপনের সময়, দীর্ঘস্থায়িত্ব, সৌন্দর্য, সহজ পরিচর্যা ইত্যাদি। এছাড়াও টাইলস ব্যবহারের জন্যে রয়েছে নানাবিধ কারণ। যেমনঃ

# অল্প সময়ে স্থাপন করা যায় ও সহজে যত্ন নেওয়া যায়

# দেয়ালে ব্যবহারের ক্ষেত্রে রঙ করার প্রয়োজন হয় না

# দেয়ালে নোনা ধরার সম্ভাবনা থাকে না

# মেঝে সমতল থাকে, আঘাতে সহজে ভাঙ্গে না

# সহজে স্ক্র্যাচ বা মরিচা পড়ে না এবং আগুন প্রতিরোধী

# টাইলস সহজে প্রতিস্থাপন করা যায় ও রক্ষণাবেক্ষণ সহজ

# মোজাইক ও মার্বেলের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচ ও বেশিদিন টেকে

tiles work

tiles work

 

চিত্রঃ টাইলস বসানো হচ্ছে

বিভিন্ন টাইলসের ব্যবহার

সিরামিক টাইলসঃ যেকোন দেয়ালে লাগানোর উপযোগী।

মিরর পলিশড টাইলসঃ ফ্লোরের উপযোগী উন্নতমানের টাইলস।

হোমোজিনিয়াস টাইলসঃ ফ্লোরের জন্য সাশ্রয়ী দামের টাইলস।

রাস্টিক টাইলসঃ দেয়াল ও ফ্লোর দুই জায়গাতেই উপযুক্ত।

 

টাইলস কেনার সময় কি কি জিনিস খেয়াল রাখতে হবেঃ

# দুটি একই টাইলস পাশাপাশি রেখে রঙ ও শেপ মিলিয়ে নিন

# ফ্লোর টাইলস-এর ক্ষেত্রে চারটি টাইলস পাশাপাশি রেখে কোণ ও জয়েন্ট মিলিয়ে নিন

# মিরর পলিশড টাইলস-এ আলোর প্রতিফলন লাইটের নিচে ধরে দেখতে পারেন

# টাইলস কতটা পানি শোষণ করে তার একটা স্ট্যান্ডার্ড আছে, আপনার পছন্দের ব্র্যান্ড সেটির ভেতরে কিনা জেনে নিন। একটি টাইলস পানির সংস্পর্শে আসলে যত ভাগ পানি শোষন করে, সেটাই পানি শোষন ক্ষমতা। যত কম পানি শোষন করবে, তত ভালো মানের টাইলস। বেশি পানি শোষনকারী টাইলস সহজে ভেঙে যেতে পারে, ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা হারাবে।

 

বিভিন্ন টাইলসএর পানি শোষণ ক্ষমতা

  • ফ্লোর টাইলস ৩-৭%
  • ওয়াল টাইলস ১০-২০%
  • পোরসেলিন ফ্লোর টাইলস ০.৫% এর কম
  • মিরর পলিশড টাইলস ০.৫% – ৩%

 

টাইলস বসাতে যে উপাদানগুলো লাগবে

১। সিমেন্ট

২। টাইলস

৩। বালি

৪। পিগমেন্ট

৫। হোয়াইট সিমেন্ট

 

মশলার অনুপাত (সিমেন্টঃবালি)

ফ্লোরে ১:৪ এবং দেয়ালে ১:৩

এক ব্যাগ সিমেন্টের সাথে ৩ ব্যাগ বা ৪ ব্যাগ বালি মিশিয়ে শুকনা অবস্থায় এমনভাবে মিক্সিং করতে হবে যেন মিক্সারটি দেখতে ছাই রঙ এর মত হয় এবং অভিন্ন দেখায়। এরপর পরিমিত পানি দিয়ে পুনরায় ভালোভাবে মিক্সিং করতে হবে। তবে মনে রাখা জরুরি, এক ঘন্টার মধ্যেই বানানো মশলা ব্যবহার করে ফেলতে হবে।  মশলার উচ্চতা ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার এর মধ্যে হতে হবে।  সিমেন্ট মিকশ্চার ছাড়াও রেডি মিক্স সিমেন্ট মিকশ্চার ব্যবহার করা যেতে পারে।

tiles ingredient

টাইলস লাগানোর পূর্বে যে বিষয়গুলো দেখতে হবে

১। ইলেকট্রিক্যাল পাইপ বা পয়েন্টগুলো ঠিকভাবে বসানো হয়েছে কিনা।

২। MK Steel Box ঠিকভাবে লাগানো হয়েছে কিনা।

৩। পানির লাইনগুলো যথাযথভাবে বসানো হয়েছে কিনা।

৪। টাইলস বসানোর আগে অবশ্যই পানির লাইনের প্রেশার চেক করে নেয়া উচিত।

৫। যেখানে টাইলস লাগাবেন, সেই জায়গা আগে থেকে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৬। ইটের গাঁথুনির ময়লা পরিষ্কার করতে হবে এবং জয়েন্টগুলো পরিষ্কার করতে হবে।

৭। পানি দিয়ে দেয়াল ভেজাতে হবে।

৮। টাইলস ফিটিং করার ২ ঘন্টা পূর্বে তা হাফ ড্রাম পানিতে ভিজাতে হবে এবং বসানোর আধা ঘন্টা আগে পানি থেকে উঠিয়ে রাখতে হবে।

 

টাইলস লাগানোর পদ্ধতি

 

১। ফ্লোরে টাইলস লাগানোর আগে ওয়াটার পাইপ দিয়ে পুরো ফ্লোরের লেভেল মার্ক করে নিতে হবে। এরপর মশলা দিয়ে একটি টাইলস বসিয়ে ফ্লোরে পায়া করে নিতে হবে। এরপর সুতা বেঁধে ফ্লোর টাইলসগুলো বসাতে হবে।

২। দেয়ালের ক্ষেত্রেও মশলা দিয়ে পায়া করতে হবে যেন উলম্ব সারি ঠিক থাকে। বর্ডার থাকলে তা হিসাবের মধ্যে এনে লাইন-বাই-লাইন টাইলস বসাতে হবে।

৩। টাইলস লাগানোর সময় কাঠ বা রবারের হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে হবে যেন ভিতরে কোন ফাঁপা না থাকে।

৪। টাইলসের মধ্যকার জয়েন্টগুলো একই রকম হতে হবে এবং যেন ২ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি না হয়।

৫। যতটুকু সম্ভব দরজা খোলার পর টাইলসের কাটপিস যেন না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং ১.৫” এর বেশি কাটপিস যেন না হয়।

৬। টাইলস যেন চৌকাঠের উপরে না উঠে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

৭। ফ্লোর টাইলস পুরো ইউনিটে এক জয়েন্ট হতে পারে অথবা অথবা কমন এরিয়া বা রুম বাই রুম আলাদা হতে পারে।

৮। স্কার্টিং এর উচ্চতা সাধারণত ৪” হয় এবং দেয়ালে ফ্ল্যাশ হলে ভালো তা নাহলে ময়লা জমে।

৯। নূন্যতম ৭ দিন কিউরিং করতে হবে।

১০। সবশেষে দেয়াল বা ফ্লোর টাইলস এর জয়েন্টগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। টাইলসের রঙ মিলিয়ে হোয়াইট সিমেন্ট ও পিগমেন্ট দ্বারা পুটি বানিয়ে পয়েন্টিং করতে হবে।

১১। পয়েন্টিং করার পর সাদা মার্কিং কাপড় দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং ২ দিন ভেজা ন্যাকড়া দিয়ে টাইলস মুঝতে হবে।

tiles work checklist

সমস্যা ও সমাধান

১। টাইলস লাগানোর পর ডফডফ শব্দ করে।

এরকম সমস্যা দেখা দিলে ঐ টাইলস পুনরায় ভেঙ্গে আবার করতে হবে। লাগানোর সময় টাইলসের সবদিকে মশলা ঢুকছে কিনা দেখে নিতে হবে এবং কাঠের বা রবারের হাতুড়ি দিয়ে এরকম শব্দ যেন না হয়ে সেটা পরীক্ষা করে নিতে হবে।

২। টাইলস উঁচু-নিচু দেখা দিলে এই টাইলসও ভেঙ্গে পুনরায় আবার টাইলস বসাতে হবে। স্প্রিট লেভেল দিয়ে বারবার চেক করে নিতে হবে।

৩। টাইলসের সাইডে দাগ দেখা দিলে ছোট দাগ হলে পয়েন্টিং করে ঠিক করতে হবে কিন্তু বড় হলে টাইলস ভেঙ্গে নতুন টাইলস বসাতে হবে।

৪। পয়েন্টিং উঠে গেলে ভালো করে পরিষ্কার না করলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৫। টাইলস লাগানোর পর চৌকাঠ টাইলসের ভিতর চলে গেলে চৌকাঠটি ঠিকভাবে বসানো হয়েছে কিনা দেখতে হবে।

 

টাইলসের যত্ন

# কোনো ধরনের কালচে দাগ যেন না হয়, সে জন্য প্রতিদিনই ঘর পানি দিয়ে মুছতে হবে।

# টাইলসের ওপর যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

#  সাধারণত টাইলসের জোড়া লাগানো স্থানের কোনায় কোনায় ময়লা জমে কালচে দাগ পড়ে, তাই সপ্তাহে অন্তত এক দিন ডিটারজেন্ট পাউডার গোলা পানি কিংবা ফোমে সাবান বা লিকুইড ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে। খুব শক্ত ব্রাশ ব্যবহার করা যাবে না, এতে স্ক্র্যাচ পড়ে যেতে পারে।

#  তেল, চর্বিজাতীয় দাগ পড়ে টাইলস যেন নষ্ট না হয়, সে জন্য যেসব স্থানে দাগ পড়বে সঙ্গে সঙ্গে তা সাবানের পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

#  দেয়ালের সিরামিক-টাইলস পরিষ্কার করার জন্য সুতির শুকনো কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

#  টাইলস-এর উপর দিয়ে ভারি আসবাব টেনে সরানো যাবে না, উঁচু করে স্থানান্তর করতে হবে।

tiles work

 

 

ভাল মানের টাইলস চেনার উপায় কি কি ?

ভাল মানের টাইলস চেনার উপায়-
  • সাইজ ও সেপ সমান
  • কাটা, ফাঁটা বা বাঁকা নয়।
কনক্রিট/সিরামিকস/টাইলস কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে ?
  • টাইলস কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
  • আপনি যে ধরনের টাইলস কিনবেন তা মার্কেটে যথেষ্ট পরিমাণে থাকতে হবে।
  • টাইলসটি একই প্রোডাকশনে তৈরি হতে হবে। একই প্রোডাকশনের না হলে সাইজ এবং রং এর পরিবর্তন হতে পারে।
  • কয়েকটি টাইলস নিয়ে দেখতে হবে সাইজ এবং রং একই আছে কিনা।
  • ডিজাইন অনুযায়ী টাইলস কেনা হচ্ছে কিনা।

বিভিন্ন ধরণের টাইলস ও বাড়ি নির্মাণে তাদের ব্যবহার

টাইলস মূলত ২ ধরণের-
  • সিরামিকস
  • প্রাকৃতিক স্টোন
ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে নানা ধরণের টাইলস পাওয়া যায়-
  • রুফ টাইলস
  • ফ্ল্যাট টাইলস
  • ফ্লোর টাইলস
  • ওয়াল টাইলস
  • ড্রেন টাইলস

আবার হোমোজিনিয়াস, মিরর পলিস, গ্রানাইট, মার্বেল ইত্যাদি নামেও জেনে থাকি।

বাড়িতে ব্যবহার-
  • সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়,
  • বাথরুমে বা যে সব দেওয়ালে পানি ও রান্নার ধোঁয়ার কারণে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে তা রোধ করার জন্য,
  • পানি নিষ্কাশনের কাজে ।