বাড়ি বানানোর খুঁটিনাটি নিয়ে ভাবছেন? আসুন হোম বিল্ডার্স ক্লাবে!
Continue readingনিজের বাড়ির স্বপ্নপূরণ: হোম লোনের খুঁটিনাটি
সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে মানুষ বানায় তার স্বপ্নের বাড়ি। যে বাড়ির অন্দরে বাহিরে লুকিয়ে থাকে শত স্বপ্ন, সাধ, আহ্লাদ। এই বাড়ি বানানোর জন্য মানুষ সঞ্চয় করে, তার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তোলে আপন মনের ঠিকানা- একান্ত নিজের একটি বাসা। কিন্তু এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়, যেটার জন্য মানুষ ব্যাংক বা এরকম ঋণপ্রদায়ী সংস্থা থেকে সহায়তা নেয়। এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চুক্তি আর কিস্তিতে সাজানো স্কিমে আপনাকে ঋণ দেবে- যা ‘হোম লোন’ বা গৃহঋণ স্কিম নামে পরিচিত। আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য জানা প্রয়োজন এই লোন কী, কেন নিবেন, কীভাবে নিবেন এবং কী কী ভাবনার পরে আপনি পছন্দ করবেন আপনার হোমলোন স্কিম। আসুন আজকে এই বিষয়গুলোই দেখে নেই এই লেখা থেকে।
হোমলোন কী?
হোমলোন হলো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধযোগ্য, নির্দিষ্ট সময়ে কিস্তিতে পরিশোধ করার উপযোগী (ইএমআই ভিত্তিক) ঋণ প্রদানের পলিসি, যেই ঋণ উপযুক্ত ব্যক্তিকে ব্যাংক বা নির্ধারিত সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি নির্মাণ কিংবা ক্রয়ের জন্য দেওয়া হয় ব্যক্তির মাসিক আয় এবং স্বক্ষমতার ভিত্তিতে।
কেন নেবেন হোম লোন?
আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে প্রধান যে বাধা তা হলো, সময় এবং অর্থ। আপনার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন সেটা আপনার হাতে না-ও থাকতে পারে। এছাড়াও এই বাস্তবায়নের জন্য লাগবে সুদীর্ঘ একটি সময়, যেখানে সর্বদা অর্থের যোগান থাকতেই হবে। এই বাধা অতিক্রম করার জন্য ব্যাংক এবং বিভিন্ন ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলো আকর্ষণীয় রেটে দেয় হোম লোন। হয়তো বাড়ি বানানোর জন্য যে টাকা প্রয়োজন, সেই টাকা একসাথে যোগাড় করা আপনার পক্ষে সম্ভব না, আর এর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলে আপনার স্বপ্ন পূরণও সম্ভব নয়। একারণেই হোম লোন নিয়ে বাড়ির কাজ করে ধীরে ধীরে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার পদ্ধতিটির উদ্ভাবন। সেইসাথে বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুসারে, হোম লোনের ইন্টারেস্টের কারণে আয়করেও ছাড় রয়েছে।
কতটুকু লোন নেয়ার জন্য আপনি উপযুক্ত?
হোম লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে আগে ভাবতে হবে আপনি কতটুকু ঋণ নেওয়ার জন্য উপযুক্ত, কতটুকু আপনার সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় করবে। এই ক্ষমতা নির্ভর করবে আপনার ঋণ শোধ করার ক্ষমতা কতখানি তার উপর। সহজভাবে বলতে গেলে, আপনার আয় এবং আনুষঙ্গিক খরচের পরে আপনার কতটা উদ্বৃত্ত থাকে তার উপর। ব্যাংক বা এরকম প্রতিষ্ঠানগুলো আপনার উপযুক্ততা নির্ধারণ করবে আপনার বা আপনার স্বামী/স্ত্রীর আয়-উদ্বৃত্ত, সম্পত্তি, দেনা, আয়ের সুস্থিতিশীলতা ইত্যাদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ভিত্তিতে।
ব্যাংকের আসল বিবেচনার বিষয় হচ্ছে আপনি আপনার ঋণ সঠিক সময়ের মধ্যে শোধ করতে পারবেন কিনা। আপনার আয়-উদ্বৃত্ত যত বেশি হবে, আপনি তত বেশি পরিমাণ ঋণের জন্য উপযুক্ত। আয়-উদ্বৃত্ত মানে হলো সরকার নির্ধারিত ট্যাক্স বাদ দিয়ে আপনার আয়। ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানভেদে এই পরিমাণের হেরফের হয়, কিন্তু গড়পড়তায় ব্যাংক ধরে নেয় আপনার আয়- উদ্বৃত্তের ৫০ শতাংশ ঋণ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ। কত সময়ের জন্য ঋণ নিচ্ছেন আর কত শতাংশ ইন্টেরেস্টে ঋণ নিচ্ছেন এটিও লোন নেয়ার পরিমাণকে ঠিক করতে সহায়তা করে। এইসব কিছু বিবেচনা করে ব্যাংক আপনাকে একটি লিমিট ঠিক করে দেবে, যা আপনি কতটুকু ঋণ নেওয়ার জন্য উপযুক্ত তা ঠিক করতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন ব্যাংক বিভিন্ন পেশার উপর একটা নির্ধারিত হারে ইন্টারেস্ট রেট আরোপ করে। সাধারণত আমাদের দেশে এই হার ৮.৫-১১% এর মধ্যে স্থির করা হয়।
সর্বোচ্চ কতটুকু লোন আপনি নিতে পারবেন?
আপনি লোন গ্রহণের জন্য উপযুক্ত হলে, অধিকাংশ ব্যাংক কিংবা লোন প্রদায়ী সংস্থাগুকে তাদের নীতিমালা অনুসারে আপনার ফ্ল্যাট বা বাড়ির দামের ১০-২০% টাকা এককালীন ডাউন পেমেন্ট হিসেবে দিতে হবে। বাকি ৮০-৯০% টাকা আপনাকে ঋণপ্রদায়ী সংস্থা কিংবা ব্যাংক দেবে। আপনার রেজিস্ট্রেশন, মালিকানা হস্তান্তরের ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি ফি ইত্যাদি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মোট প্রদানকৃত অংকের অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সাধারণত ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বাধিক কত ঋণ পাবেন সেটার ভিত্তিতে আপনাকে লোনের পরিমাণ দেখায়, কিন্তু এটি আপনাকে পুরাটাই নিতে হবে এমন নয়। আপনি আপনার সুবিধামতন এই পরিমাণ কিংবা এর চেয়ে কম পরিমাণ ঋণ নিতে পারেন। এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে, ডাউন পেমেন্ট বেশি হলে এবং লোনের পরিমাণ কম হলে, আপনার ইন্টারেস্টের পরিমাণও কমে যাবে। যেটা আপনার জন্য পরবর্তীতে স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
কী কী লাগবে?
আপনি যদি লোন নিতে চান আপনার সাথে আইন ও নীতিমালা অনুসারে কিছু দরকারি কাগজপত্র এবং তথ্য সাথে থাকতে হবে। আপনি প্রতিষ্ঠান বাছাই করার পরে আপনি সে প্রতিষ্ঠানের হোম লোন সেকশনের মানদণ্ড এবং চাহিদা মোতাবেক আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। এরজন্য মূলত যেসব তথ্য অবশ্যই লাগবে তা হলো:
১. জাতীয় পরিচয়পত্র
২. ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
৩. ট্যাক্স পরিশোধের সার্টিফিকেট
৪. বায়না, মালিকানার দলিল
৫. মূল্যমানের যথাযথ দলিল
৬. ইন্স্যুরেন্স এর কাগজপত্র
৭. মোক্তারনামা বা যথাযথ লিখিত অনুমোদনপত্র
এসব ছাড়াও আপনাকে আপনার অবস্থা বুঝে আরো কিছু তথ্য দিতে হতে পারে। আপনি যদি চাকরিজীবী হন তাহলে আপনাকে ১ বছরের বেতনের স্টেটমেন্ট এবং এর সাথে যেই প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিচ্ছেন সেখানে একজন ইন্ট্রোডাক্টর লাগবে যার সূত্রে আপনাকে ব্যাংক ঋণ দেবে। আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তাহলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানির সার্টিফিকেট ও পার্টনারশিপের কাগজপত্র দেখাতে হবে, সাথে আপনার বিগত বছরের ইনকাম স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
আপনি যদি সেলফ এমপ্লয়েড বা উদ্যোক্তা হন তাহলে আপনাকে নিজস্ব প্যাডে, দলিলকৃত সই, সিল সহ পেশাগত সার্টিফিকেট উপস্থাপন করতে হবে। আর আপনি যদি নিজে জমির মালিক হন তাহলে আপনাকে বিলের কাগজপত্র দেখাতে হবে।
কোথায় পাবেন হোমলোন?
বিভিন্ন ফিনান্সিয়াল কোম্পানি আর ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব কিংবা সরকারি পূর্ব-নির্ধারিত হারে আপনাকে ব্যাংকের স্কিম অনুযায়ী লোন দেয়। সাধারণত ব্যাংকে নিজস্ব একাউন্ট থাকলে বা লেনদেন থাকলে হোম লোন পাওয়া সুবিধাজনক হয়। বিভিন্ন বেসরকারি কিংবা সরকারি ব্যাংক, বীমা কিংবা ফিনান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর হোম লোন স্কিম তাদের সাইটেই পাওয়া যায়, যেখান থেকে তুলনা করার পরে আপনার জন্য কোনটি সুবিধাজনক সেটি পছন্দ অনুসারে বেছে নিতে পারেন। সরকার এবং ব্যাংক অনুমোদিত যেকোন পদ্ধতিতে আপনি এই হোমলোন পরিশোধ করতে পারেন।
সিঁড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য
সিঁড়ি বিল্ডিং এর এমন অংশ যা ফ্লোর বা ছাদ পরিবর্তনের মাধ্যম। অনেকেই ভেবে থাকেন যে একটা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সিঁড়ি নির্মাণ সম্ভবত সহজ কাজগুলোর মধ্যে একটি। আসলে তা নয়। ভবনের সিঁড়ি নির্মাণ সবচেয়ে ঝমেলাপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে একটি। তাই সিঁড়ি নির্মাণের সময় যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এর বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হয়েছে। তবে শুরুতেই আসুন জেনে নেওয়া যাক, সিঁড়ির বিভিন্ন অংশ কি কিঃ
সিঁড়ির বিভিন্ন অংশ-
- ট্রেড
- রাইজ
- ল্যান্ডিং
- নোজিং
- ফ্লাইট
- হ্যান্ড রেইল
- ওয়েন্ট স্ল্যাব
- ল্যান্ডিং বীম
- ফ্লোর বীম
- নিউওয়েল পোস্ট
- সেফটি
- ওয়ান্ডার
- কাটেইল স্টেপ
- ফ্লায়ার
সিঁড়ির প্রকারভেদ-
- কাঠের
- স্টিলের
- কংক্রিটের
সিঁড়ির অবস্থান-
- পাবলিক বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে প্রধান প্রবেশদ্বারের কাছাকাছি।
- বাড়ির ক্ষেত্রে সিঁড়ি এমন অবস্থানে হতে হবে যেন সবগুলো ঘর বা কক্ষ থেকে সহজে বের হওয়া যায়।
- বাড়িতে গোপনীয়তা বজায় থাকে।
- পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করে।
সিঁড়ির প্রশস্ততা-
- ফ্লাইট দৈর্ঘ্য সাধারণত ৩ স্টেপ থেকে ১২ স্টেপ পর্যন্ত হতে পারে
- পিচ কোন সর্বনিম্ন ২৫০-সর্বোচ্চ ৪০০
- রাইজ ৬-৭ ইঞ্চি
- ট্রেড ১০-১২ ইঞ্চি