বাড়ি নির্মাণে ব্লক ব্যবহারের প্রচলন

প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে বাড়িঘর নির্মাণের পদ্ধতিতে এসেছে বিস্তর পরিবর্তন। অন্যান্য যান্ত্রিক প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে সাথে চোখে পড়ার মতো একটি পরিবর্তন হলো অবকাঠামো নির্মাণে ক্রমবর্ধমান সিমেন্টের ব্লক ব্যবহার। ইটের পর ইট সাজিয়ে রাজমিস্ত্রির হাতে ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়ানো ভবনগুলোর পাশেই আজকাল দাঁড়াচ্ছে সিমেন্ট ব্লক আর ‘হলো’ (ফাঁপা) ব্লকের তৈরি দালানকোঠা। দেখতেও মন্দ নয় ব্লকের তৈরি কাঠামো, বরং নির্মাণশৈলী ভালো হলে ব্লকের তৈরি বাড়িঘরেই আধুনিকতার ছাপ ফুটে ওঠে বেশি।

ইট নাকি ব্লক- বাড়ি তৈরির সময় তাই দ্বিধান্বিত হয়ে যান অনেকেই। দুটোরই রয়েছে নিজস্ব ধাঁচ, সৌন্দর্য আর সুবিধাদি। উভয়েই মজবুত, বিদ্যুৎ অপরিবাহী, তাপ ও চাপ সহনীয়। বাড়ির নকশা অনুযায়ী যেকোনোটিই বেছে নেয়া যেতে পারে নির্দ্বিধায়। তারপরও, দুটোর ব্যবহারের সুবিধাগুলো জানা থাকলে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে।

সিমেন্ট ব্লক বনাম ইট

সিমেন্ট ব্লক সাধারণত ২০০ X ৪০০ X ২০০ মি.মি. (৭.৮৭ X ১৫.৭৫ X ৭.৮৭ ইঞ্চি) আকারের হয়ে থাকে, যেগুলো ২০০ মি.মি.-এর (৭.৮৭ ইঞ্চি) পুরু দেয়াল নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। চিকন দেয়ালের জন্য ব্যবহার করা হয় ১০০ X ৪০০ X ২০০ মি.মি. (৩.৯৪ X ১৫.৭৫ X ৭.৮৭ ইঞ্চি) আকারের ব্লক। ইট সাধারণত ২৩০ X ১১০ X ৭৫ মি.মি. (৯.০৬ X ৪.৩৩ X ২.৯৫ ইঞ্চি) আকারের হয়ে থাকে।

ব্লকের তুলনায় ইটের ওজন কম হওয়ায় কাজ করার ক্ষেত্রে এটি সুবিধাজনক। সলিড (নিরেট) ব্লকগুলো আকারে বড় ও ভারী হলেও ‘হলো’ (ফাঁপা) ব্লকগুলো বেশ হালকা এবং কাজ করার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক। ‘হলো’ ব্লকের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এর ভেতরে ফাঁকা স্থান থাকায় এটি ইট এবং সলিড ব্লক উভয়ের তুলনায় অধিক তাপনিরোধী। চাপ সহনশীলতাও ইটের চেয়ে ব্লকের বেশি।

অন্যদিকে, বর্ষাকালে পানি অধিক পানি শোষণ করায় ইটের দেয়ালে ছত্রাক গজায়, ব্লকের দেয়ালে যা অত সহজে জন্মাতে পারে না। আবার ব্লকের স্থায়িত্বও ইটের চেয়ে কিছু বেশি। নির্মাণকাল বিবেচনায় উভয়েরই নিজস্ব সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। ব্লকের আকার ইটের তুলনায় বড় হওয়ায় ব্লক দিয়ে দেয়াল নির্মাণ দ্রুত হয়। আবার ব্লকের চেয়ে ইট ছোট ও হালকা হওয়ায় ইট দিয়ে দেয়াল নির্মাণ অপেক্ষাকৃত সহজ।

ইটের কিছু বিশেষ সুবিধা

১. ব্লকের চেয়ে ইটের তাপ শোষণ ক্ষমতা অনেক বেশি। ইটের কাঠামো ও গঠন এমন যে এটি অধিক তাপ ধারণ করতে পারে, বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ‘থারমাল ম্যাস’। দিনভর তাপ ধারণ করলেও রাতের বেলা দ্রুত তাপ ছেড়ে দিতে সক্ষম ইট।

২. ‘হলো’ ব্লকের তুলনায় ইটের স্থায়িত্ব বেশি। ইটের তৈরি বাড়ি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবার কারণেই বাড়ি নির্মাণে এটি এখনও সর্বাধিক জনপ্রিয় উপকরণ।

৩. ইটের একটি মৌলিক গুণ হলো ‘কম্প্রেসন’ বা সংনমন। ইট তৈরিতে এর উপকরণ অর্থাৎ মাটি এতটা কমপ্রেস করা হয় যে ইটের ঘনত্ব সহজেই ব্লকের চেয়ে অনেকগুণ বেশি হয়। ফলে ইটের তৈরি দেয়ালে কোনোরূপ দাহ্য বিস্ফোরণ বা দহনের সম্ভাবনা থাকে না।

৪. রক্ষণাবেক্ষণে ইটের দেয়ালের চেয়ে সুবিধাজনক আর কিছুই নেই। ইটের দেয়ালে নির্মাণ চলাকালে কিছু রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া পরবর্তীতে আর তেমন কোনো যত্নের প্রয়োজন হয় না। যদিও ব্লকের দেয়াল নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ব্লকের কিছু বিশেষ সুবিধা

১. ব্লক দিয়ে বাড়ি নির্মাণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো খরচ কমে আসা। নির্মাতারা অনুমান করে থাকেন যে ব্লক দিয়ে বাড়ি নির্মাণ ইটের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কম খরচে হয়ে যায়। প্রায় সাড়ে ৪টি ইটের সমান একটি ব্লক বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫-৪০ টাকায়। ইটের ব্যবহারে যেখানে অধিক সিমেন্ট, অধিক সময়, এবং ফলস্বরূপ রাজমিস্ত্রির পেছনে অধিক ব্যয় হয়, ব্লকের ব্যবহারে সাশ্রয় হয় সবগুলোই।

২. ব্লকের একটি বড় গুণ হলো এটি পরিবেশবান্ধব। ব্লক তৈরি করা হয় ফ্লাই অ্যাশ থেকে। আর ফ্লাই অ্যাশ হলো তাপোৎপাদী বিক্রিয়ার একটি অবশেষ মাত্র, যা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত হয়। এখানে ব্লকের কল্যাণে দ্বিমুখী লাভ পরিবেশের। প্রথমত, ব্লক উৎপাদনে মাটি পোড়াতে হচ্ছে না, ফলে চাষযোগ্য জমি বা পাহাড় খনন করতে হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, ফ্লাই অ্যাশ একটি বায়ু দূষণকারী উপাদান যা ব্লক নির্মাণে ব্যবহৃত হলে পরিবেশ দূষণমুক্ত হয়। এছাড়াও, ফ্লাই অ্যাশের দাম কম হওয়ায় ব্লক নির্মাণে খরচও কম হয়।

৩. ব্লকের মধ্যে সবচেয়ে হালকা হলো ‘অটোক্লেভড এরিয়েটেড কনক্রিট’ ব্লক বা এএসি ব্লক। এই ব্লক দিয়ে দেয়াল নির্মাণ অপেক্ষাকৃত অনেক সহজ বলে এটি নির্মাতাদের পছন্দের উপকরণ হয়ে উঠছে।

৪. বর্তমানে বাড়ি নির্মাণের সময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় যে বিষয়ে তা হলো বাড়ির ভূমিকম্প সহনশীলতা। নানা কারণে বেড়েছে ভূমিকম্প আর টর্নেডোর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তাই অবকাঠামো নির্মাণের একটি প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা হলো একে ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মাণ করা। আর এখানে বেশ এগিয়েই থাকে ব্লক। যেকোনো প্রকার কম্পন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ইটের চেয়ে ব্লকের কার্যকারিতা অনেকাংশেই বেশি।

৫. শহুরে বাড়িঘর, বিশেষ করে ব্যস্ত সড়কের পাশে কিংবা শিল্প-কারখানাবেষ্টিত অঞ্চলে বাসা বাড়ি নির্মাণে ব্লক হতে পারে দারুণ উপযোগী। একটি ইট এককভাবে অধিক ঘন হলেও ইটের গাঁথুনিতে তুলনামূলকভাবে অধিক সংখ্যক সংযোগস্থল থাকে যা ব্লকের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম। ফলে ব্লকের তৈরি বাসাবাড়ি ইটের তৈরি বাসাবাড়ির তুলনায় অধিক শব্দনিরোধী। তাই শব্দবহুল এলাকায় বাড়ি নির্মাণে ব্লকই শ্রেয়।

ইট এবং ব্লক, উভয়ের গুণাগুণ এবং বিশেষ সুবিধাদি জানবার পর কোনোটিকেই ব্যবহারের অনুপযোগী বলার সুযোগ নেই। বরং সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রয়োজন এবং পছন্দ অনুযায়ী। কেউ কেউ চান নির্মাণকাজ শেষে আর কিছু নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে। তাদের প্রথম পছন্দ হবে ইট। আবার যারা খরচ বাঁচিয়ে বাড়ি নির্মাণ এবং পরবর্তীতে নিয়মিত এর পরিচর্যা, পরিবর্তন আর পরিবর্ধনের ব্যাপারে আগ্রহী, তাদের জন্য ব্লকই যুতসই।

কংক্রিটের অ্যাগ্রেগেট স্ট্যান্ডার্ড: ভালো অ্যাগ্রেগেটের যা যা গুণাবলি থাকা প্রয়োজন

স্থাপনার জগতে কংক্রিটের অত্যাবশ্যক প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানে না, এমন কাউকে বর্তমানে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। প্রধানত ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা হলেও কংক্রিট সুপারস্ট্রাকচার কনস্ট্রাকশনেও কার্যকর। স্ল্যাব এবং সিঁড়ি নির্মাণের সাথে সাথে বিভিন্ন স্থাপনাশিল্পেও কংক্রিটের অনবদ্য ভূমিকা আছে। এত প্রয়োজনীয় এই উপাদান সম্পর্কে ভালো করে জানা তাই বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পূর্বে বেশ দরকারি। এক নজরে তাই দেখে নেয়া যাক ভালো অ্যাগ্রেগেটের কী কী গুণাবলি থাকা দরকার ভালো মানের কংক্রিট পেতে হলে।

সারফেস, টেক্সচার, আকার, গ্রেডেশন, শোষণ ক্ষমতা, বাল্ক ইউনিট ওয়েট, স্পেসিফিক গ্র‍্যাভিটি, ময়েশ্চার কনটেন্ট ইত্যাদি হলো অ্যাগ্রেগেটের বৈশিষ্ট্য। অ্যাগ্রেগেটের কাজ হল ঘর্ষণজনিত প্রতিবন্ধকতা রোধ করা, জমাট বাধা রোধ করা, অ্যালকালি এবং সালফেটের প্রভাব ঠেকানো, সাথে সংকীর্ণভাব মোচন করা। সাধারণ স্থাপনার ক্ষেত্রে অ্যাগ্রেগেট ৬৫-৭৫ ভাগ আয়তনের হয়ে থাকে, বাকিটুকুতে থাকে সিমেন্টের মিশ্রণ, পানি এবং বাতাস। অ্যাগ্রেগেট প্রধান ভূমিকা রাখে মানসম্মত কংক্রিটের ক্ষেত্রে। যত ঘনভাবে Aggregate-এর গঠন নিশ্চিত করা যাবে কংক্রিটের স্থায়িত্ব ততই ভালো হবে। এই কারণে অ্যাগ্রেগেটের গ্রেডেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রেডেশনের ভিত্তিতে অ্যাগ্রেগেট দুই রকমের হয়ে থাকে। 

১। কোর্স অ্যাগ্রেগেট (Coarse Aggregate) 

২। ফাইন অ্যাগ্রেগেট (Fine Aggregate)

কোর্স অ্যাগ্রেগেট

আমরা ফুটপাতে হেঁটে যাওয়ার সময়ে বা ড্রাইভের সময় পায়ের নীচে শক্ত যা অনুভব করি এইটাই কোর্স অ্যাগ্রেগেট। প্রাকৃতিক পাথর ভেঙেই এই অ্যাগ্রেগেট পাওয়া যায়। অ্যাগ্রেগেট কেমন হবে তা নির্ভর করে পাথরের ধরনের উপর। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাগ্রেগেট মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। এই ধরনের উপাদান স্ল্যাবের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হয় না, বা রিইনফোর্সমেন্ট বারের মধ্যকার দূরত্বের এক-পঞ্চমাংশের বেশি হয় না।

বিভিন্নরকম কোর্স অ্যাগ্রেগেট আমরা ব্যবহার করে থাকি। যেমন-

১। পাথর বা গ্র‍্যাভেল

এই ধরনের পাথর একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে বা। কংক্রিটের মিশ্রণে এই গ্র‍্যাভেল থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ইউনিট ওয়েট প্রতি ঘনফুটে ১৪০ থেকে ১৫২ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে সাধারণভাবে এই মান ১৪৫ পাউন্ড ধরে নেয়া হয়। এ ধরনের অ্যাগ্রেগেটের সাধারণ আকার গ্র‍্যানিউল থেকে শুরু করে বোল্ডারের মতো বিশাল সাইজেরও হতে পারে।

২। স্যান্ড বা বালি

বালি হল সবচাইতে মসৃণ অ্যাগ্রেগেটের উদাহরণ। বিভিন্ন রকম বালি আছে, শার্প স্যান্ড/বিল্ডার্স স্যান্ড/ক্লিন ড্রাইড স্যান্ড যা কোর্স বা ফাইন বিভিন্ন অ্যাগ্রেগেটের কাজ করে। কোর্স বালি কংক্রিটের মিশ্রণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। 

৩। গ্রানাইট

Crushed stone texured background.

গ্রানাইট এক ধরনের ইগ্নিয়াস পাথরের উদাহরণ। একে বিভিন্ন ডায়ামিটারে চূর্ণ করে অ্যাগ্রেগেট হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

৪। পাথরচূর্ণ বা স্টোন চিপ

Stone. Crushed stone construction materials.

এই পাথরচূর্ণ সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যাগ্রেগেট। কংক্রিটের বেস বা ভিত্তি হিসেবে বহুল ব্যবহৃত এই বস্তুর অ্যাগ্রেগেট-সিমেন্টের অনুপাত মেনে না চললেও হয়।

৫৷ রিসাইকেল্ড অ্যাগ্রেগেট

এই ধরনের অ্যাগ্রেগেট পূর্বে নির্মিত কংক্রিট ভেঙে পছন্দানুযায়ী সাইজে বানিয়ে নেওয়া হয়। বেস লেয়ার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এই উপাদান। এর শোষণ ক্ষমতা এবং স্পেসিফিক গ্র‍্যাভিটি অন্যান্য প্রাকৃতিক অ্যাগ্রেগেটের চাইতে বেশি থাকে। 

এছাড়াও ভার্মিকুলাইট, গ্লাস, স্ল্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন নতুন রকমের অ্যাগ্রেগেট নিয়েও কাজ হচ্ছে। 

ফাইন অ্যাগ্রেগেট

ফাইন অ্যাগ্রেগেট হলো বালি বা পাথরচূর্ণ যার ডায়ামিটার ৯.৫৫ মিলিমিটারের চেয়ে কম হয়। এই অ্যাগ্রেগেট ৪.৭৫ মিলিমিটার সীভের মধ্যে সহজেই পার হয়ে যায়। প্রাকৃতিক বালি, সিল্ট, পাথর গুড়ো, কাদা এসবও ফাইন অ্যাগ্রেগেটের শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত। ফাইন অ্যাগ্রেগেটের উদ্দেশ্যই হল কোর্স অ্যাগ্রেগেটের মধ্যে বিদ্যমান শূন্যস্থান পূরণ করে আরো বেশি কার্যকরী করে তোলা।

মজবুত দীর্ঘস্থায়ী ঘরের জন্য কংক্রিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই অ্যাগ্রেগেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বাছাইতে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ভালো মানের অ্যাগ্রেগেট ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই আপনার স্থাপনার কাজ হতে পারে সফল এবং দীর্ঘমেয়াদী।