বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেটের কোন কিছু কিনতে চাইলে সেটার জন্য জমি ভালোভাবে দেখে নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আপনার স্বপ্নের অ্যাপার্টমেন্টটা একটা জায়গার উপরে দাঁড়িয়ে থাকবে। তাই সেই জায়গাটার কোন সমস্যা আছে কি না, জায়গাটা নিয়ে কারোর কোনো দ্বন্দ্ব চলছে কি না, সেসব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে আপনাকেই। এটা ঠিকভাবে না করলে আপনার জীবনের জমানো সকল সম্পত্তি এক নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য। তাই জমি কেনার আগে হয় নিজে, কিংবা উকিলের সাহায্য নিয়ে জমি সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে হবে।
জমির প্রকার –
সাধারণত দুই প্রকারের জমি পাওয়া যায় রিয়েল এস্টেটের মতে।
১. লিজহোল্ড জমি – আপনি যখন লিজহোল্ডে কোন প্রপার্টি বা জমি কিনছেন, সেটা আপনাকে সরকার বা সরকারী কোন এজেন্সির কাছ থেকে ইজারায় নিতে হব।
২. ফ্রিহোল্ড জমি – জামিনদারি প্রক্রিয়ায় ফ্রিহোল্ড জমি কেনার অর্থ হল পর্যাপ্ত পরিমাণ কাগজপত্র ও মালিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে জমি ক্রয় করা
ফ্ল্যাট কেনার আগে যেসব কাগজপত্র ভালোভাবে দেখে নিতে হবে তা হল –
(লিজহোল্ড প্রপার্টির জন্য)
১. অ্যালটমেন্ট লেটার
২. লিজ ডিড
৩. পজিশন লেটার
৪. সংশ্লিষ্ট এজেন্সি কর্তৃক মিউটেশন (প্রথম এলার্টির ক্ষেত্রে)
৫. সেলস ডিড (আগে জমির মালিকানা বদল হয়ে থাকলে)
৬. সংশ্লিষ্ট এজেন্সির কাছ থেকে জমি বিক্রি করার অনুমতি (মালিকানা আগেই বদল হয়ে থাকলে)
৭. জমি অফিস থেকে মিউটেশন
৮. ট্যাক্স রিসিপ্টের কপি
(ফ্রিহোল্ড প্রপার্টির জন্য)
১. টাইটেল ডিড (যদি বিক্রেতা জমির মালিক হয়ে থাকে)
২. বিক্রেতা যার কাছ থেকে জমি কিনেছে সেই কাগজপত্র
৩. গত ২৫ বছর বা সর্বশেষ সমীক্ষার পরে জমির মালিকানা যতবার পরিবর্তিত হয়েছে তার কাগজপত্র
৪. জমির অধিকার সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র
৫. ট্যাক্স রিসিপ্টের কপি
৬. পার্টিশান ডিড
অন্যান্য কাগজপত্র
১. বিদ্যুৎ, পানি গ্যাস – ইত্যাদি বিল
২. সকল সংশ্লিষ্ট ডিড, কাগজপত্র
৩. বাড়ি বা ফ্ল্যাটের অনুমোদনপ্রাপ্ত ডিজাইন
কাগজপত্র পাওয়ার পর
সকল কাগজপত্র পাওয়ার পরে সিটি কর্পোরেশান বা রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্রের সাথে একটা দরখাস্ত জমা দিয়ে আসতে হবে। ফ্ল্যাট কেনার জন্য গত ২৫ বছর বা সর্বশেষ সমীক্ষার পরে জমির মালিকানা যতবার পরিবর্তিত হয়েছে তার কাগজপত্র নজরে রাখতে হবে। ফলে জমির সকল তথ্য সঠিক কি না, তা জানা যাবে।
অধিক সতর্ক থাকার জন্য যা যা করতে হবে
জমি বিক্রেতা যদি উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটা পেয়ে থাকেন, তবে সেই উইল, উত্তরাধিকারের কাগজপত্র যোগাড় করতে হবে। যুগ্ম মালিকানার প্রপার্টির ক্ষেত্রে আগে থেকে ডিড সই করিয়ে রাখতে হবে এই মর্মে যে পরবর্তীতে আর যেন তারা কোন ঝামেলা না করে মালিকানা নিয়ে।
যেসব জমি কেনা একদমই উচিত নয় –
১. ইতোমধ্যে দখল করা জমি
২. রাস্তার সাথে যোগাযোগ ছাড়া জমি
৩. ইজারার জমি
৪. যে জমির সেলস অ্যাগ্রিমেন্ট এর মধ্যেই হয়ে গেছে
৫. মামলাওয়ালা জমি
৬. যে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে